আমাদের পবিত্র গ্রন্থ মহাভারতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে মানবজাতির উদ্যেশে কিছু উপদেশ দিয়েছিলেন যাহা আজও প্রাসঙ্গিক । পড়লে ভালই লাগবে ।
ইচ্ছা,আশা,প্রত্যাশা,আকাঙ্খা, এই সবই তো মনুষ্য সমাজের চালিকা শক্তি, তাই না ? যদি কেউ আপনাকে প্রশ্ন করে যে আপনি কে ? তবে আপনার উত্তর কী হবে ? ভেবে দেখুন । আপনি তখন বুঝতে পারবেন যে আপনার ইচ্ছাই আপনার জীবনের ব্যাখ্যা । কিছু পাওয়ার সাফল্য, কিছু না পাওয়ার নিষ্ফলতাই আপনার পরিচয় । অধিকতর ব্যক্তি এই ভাবেই জীবিত । নিজের ভিতর থেকে শেষ হতে থাকে, তবু নিজের ইচ্ছাগুলোকে মারতে পারে না । ইচ্ছা তাকে এমন ভাবে ছুটাতে থাকে, যেমন মৃগের নেশায় শীকারী । আবার এই ইচ্ছেগুলোর গর্ভ থেকেই জ্ঞানের প্রকাশও ঘটে । কি করে ? যখন ইচ্ছে অপূর্ণ থেকে যায়, আশা ভেঙ্গে যায়, তখন সেখান থেকেই জ্ঞানের কিরণ প্রবেশ করে মানুষের হৃদয়ে । না, এ গাঁথা শুধু ইচ্ছেগুলোর পরস্পরের সংঘর্ষের নয়, নয় অসৎ আকাঙ্খা থেকে জন্ম নেওয়া ভয়াবহ রক্তপাতের, এ গাঁথা হলো ইচ্ছের গর্ভ থেকে উৎসারিত হওয়া জ্ঞানের ।
সন্তানের ভবিষ্যত সুখে ভরে তুলার চেষ্টা , এ তো প্রত্যেক মাতা-পিতার প্রথম কর্ত্তব্য, যাদের আপনিই এ সংসারে এনেছেন । যাদের কর্মের ফলে এ জগৎ আপনারও পরিচয় পাবে ভবিষ্যতে, তাদের ভবিষ্যৎ সুখদায়ক করার চেষ্টার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কী বা হতে পারে । কিন্তু সুখ আর সুরক্ষা, এসব কি মানুষের কর্ম্ম থেকে প্রাপ্ত হয় না ? মাতা-পিতার দেওয়া ভাল বা মন্দ সংস্কার, বা তাদের দেওয়া যোগ্য বা অযোগ্য শিক্ষা, এ সবই কি আজকের সমস্ত কর্মের মূল নয় ? সংস্কার আর শিক্ষা থেকে তৈরী হয় মানুষের চরিত্র, অর্থাৎ মাতা-পিতা নিজের সন্তানদের যেমন চরিত্র নির্মাণ করেন, তেমনই হয় তাদের ভবিষ্যৎ । কিন্তু তবুও অধিকতর মাতা-পিতা নিজেদের সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার চিন্তায় তাদের চরিত্র নির্মানের প্রয়োজনের কথা ভুলেই যান । বস্তুত যেসব মাতা-পিতা শুধু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেন, তাদের সন্তানদের কোন লাভ হয় না । আর যেসব মাতা-পিতা নিজেদের সন্তানের শুধু ভবিষ্যৎ নয়, তার চরিত্রের নির্মাণ করেন, সেই সন্তানের প্রশস্তি বিশ্ব সংসার করে । স্বয়ং বিচার করুন ।
ক্রমশ…………